• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

হান্নানের জানাজায় সহস্রাধিক মুসল্লির দেখা মিললেও শ^শুর বাড়ির কারো দেখা মিলেনি

প্রকাশ:  ১৬ মার্চ ২০২২, ১০:৫৬
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 চাঁদপুর পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ডের বিষ্ণুদী রোডস্থ ফেক্সিলোড ব্যবসায়ী মোঃ হান্নান মৃধার জানাজায় ও দাফনে সহস্রাধিক মুসল্লি অংশ নিয়েছে। তার জানাজায় শ^শুর বাড়ির কারো দেখা যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে হান্নানের বৃদ্ধ বাবা-মা সাংবাদিকদের জানান, নিখোঁজের পরের দিনই পুত্রবধূ আয়শা তার ঘর থেকে প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। আমার ছেলের লাশ দেখার জন্য শত শত মানুষ আমার বাড়িতে ভিড় জমিয়েছে। কিন্তু আমার পুত্রবধূ ও তার ভাই-বেরাদর কেউই আসেনি। তারাই আমার ছেলেকে খুন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই বলে বৃদ্ধ বাবা হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন।
মঙ্গলবার দুপুর ২টায় বিষ্ণুদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বালুর মাঠে মোঃ হান্নান মৃধার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পূর্বে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ, পৌর ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অ্যাডঃ কবির হোসেন চৌধুরী, চাঁদপুর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিমুল হাসান শামনু ও মরহুমের চাচাতো ভাই মোঃ সজিব মৃধা। জানাজায় ইমামতি করেন কমিউনিটি পুলিশিং চাঁদপুর অঞ্চল-৬-এর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ আবদুর রহমান গাজী। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মোঃ হান্নান মৃধার স্ত্রী আয়েশা আক্তার আশার মুঠোফোনে কল দিলে ফোন রিসিভ করেন আশার বোন। আশাকে ফোন দিতে বলা হলে ওই নারী বলেন, সে অসুস্থ। আপনি আশার ফোন রিসিভ করলেন, আপনার পরিচয় দিন। ওই নারী বলেন, আমার পরিচয় দেয়া লাগবে না। সাংবাদিকদের যখন আমাদের প্রয়োজন হয় তখনই আমরা বলব। ‘দেখেন হান্নানের জানাজায় আপনাদের কেউ কেন আসেননি’ জানতে চাইলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
মোঃ হান্নান মৃধার একমাত্র ছেলে আবু তালহা তিন বছর বয়সী। এ সন্তানের খাবার দিতে গিয়ে গত ১ মার্চ নিখোঁজ হন মোঃ হান্নান মৃধা। পরে এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। কিন্তু হান্নান মৃধার খোঁজ মিলেনি, তিনি অবশেষে নিজ গ্রামে আসেন লাশ হয়ে। তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিলো। তার বন্ধুরা মিলে টাকা সংগ্রহ করেছিলো। কিন্তু ওই ফোনে না পাওয়ায় মুক্তিপণের টাকা দিতে পারেনি। এমন তথ্য জানিয়ে তার বন্ধু লুৎফুর রহমান কথাগুলো বলে চোখের পানি ছেড়ে দিলেন। হান্নান মৃধা ২০০০ সালে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন এবং  চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে বিএ পাস করার পরে কোনো চাকরি না পাওয়ায় নিজ বাড়ির সামনেই ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা শুরু করেন। তার সাথে এলাকার সবার ভালো সম্পর্ক ছিলো এবং তিনি একজন সহজ-সরল লোক ছিলেন বলে এলাকাবাসী জানায়।
জানাজার নামাজের পূর্বে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি জানান, মামলার আইও হিসেবে এসআই রাশেদের পরিবর্তে থানার তদন্ত অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমাদের একটি টিম যশোরে পাঠানো হয়েছে, আমরা অচিরেই এ বিষয়ে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে পারবো।
চাঁদপুর পৌর সভার ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অ্যাডঃ কবির হোসেন চৌধুরী বলেন, মোঃ আবুল হোসেন মৃধার একমাত্র ছেলে মরহুম মোঃ হান্নান মৃধা। বৃদ্ধ বাবা-মার পাশে আমি থাকবো। যেহেতু এ পরিবারের রোজগারের আর কেউ নেই। আমি প্রতি মাসে তাদের সংসারের খরচ বহন করবো বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

সর্বাধিক পঠিত